শরীর দুর্বল লাগার কারণ ও সমাধান

কোন কারণ ছাড়াই শরীরে শক্তি পাই না! সারাক্ষণ দুর্বল লাগে! কোন কাজে মন বসে না! এইটা আসলে কেন হয়? শরীর দুর্বল লাগা কোন রোগের কারণে হতে পারে আবার অসতর্কতা বা অসচেতনতার কারণেও হতে পারে। তবে যে কারণেই শরীর দুর্বল লাগুক না কেন সুস্থ থাকার জন্য সেই কারণগুলি খুঁজে বের করে দুর্বলতা দূর করা অত্যন্ত জরুরি।

দুর্বল লাগার কারণ ও সমাধান

আমরা বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বেশ কয়েকটি গবেষণা থেকে শরীর দুর্বল লাগার বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছি। আজকের এই আর্টিকেলে শরীর দুর্বল লাগার এই সকল অজানা কারণগুলো এবং তার সমাধান তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

১। অ্যানিমিয়া

আমাদের রক্তে রেড ব্লাড সেল নামে এক ধরনের সেল থাকে এবং এদের মধ্যে হিমোগ্লোবিন থাকে। আমরা যে শ্বাস-প্রশ্বাস নেই সেই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে যে অক্সিজেন প্রবেশ করে। হিমোগ্লোবিন সেই অক্সিজেন ফুসফুস থেকে ধরে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ পৌঁছে দেয়। আমাদের শরীরের যে বিভিন্ন কোষ থাকে তারা এই অক্সিজেন ব্যবহার করে খাদ্য তৈরি করে। অর্থাৎ শরীরের কোষ সমূহের মূল শক্তির জায়গাটাই হল অক্সিজেন। তাই আপনার শরীরে রেড ব্লাড সেল বা হিমোগ্লোবিন যদি কম থাকে তাহলে আপনার শরীর দুর্বল লাগবে। কেননা অক্সিজেন পরিবহন ব্যাহত হবে।

অ্যানিমিয়ার লক্ষণ

  • সব সময় শরীর দুর্বল লাগে।
  • শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয়।
  • হৃদস্পন্দন কিছুটা অনিয়মিত অর্থাৎ কখনো দ্রুত আবার কখনো ধীরে হতে পারে।
  • শরীর হলদে মনে হয়।
  • মাথা ঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা, হাত পা ঠান্ডা হয়ে আছে এমন মনে হয়।

অ্যানিমিয়া কেন হয়?

অ্যানিমিয়া কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় হতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে আপনি যে ওষুধটা এই মুহূর্তে খাচ্ছেন তা শেষ হয়ে গেলে অ্যানিমিয়া ভালো হয়ে যাবে। আবার জন্মগত কিছু রোগ থাকতে পারে যে রোগের কারণে ফলিক এসিড, আয়রন অথবা ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি দেখা দেয় ফলে অ্যানিমিয়া হয়।

অ্যানিমিয়া দূর করার উপায়

এখন কিছু খাবারের কথা বলছি যে খাবারগুলো খেলে আপনার ফলিক এসিড, আয়রন এবং ভিটামিন বি১২ এর ঘাটতি পূরণ হবে। খাবারগুলো হল চিংড়ি মাছ, পালং শাক এবং অর্গান মিট। অর্গান মিট হচ্ছে মুরগি, গরু বা খাসির কলিজা, ফুসফুস ইত্যাদি। অর্থাৎ শরীরের মধ্যে যে অর্গানগুলো রয়েছে সেগুলো। আরো রয়েছে লেগুন জাতীয় জিনিস যেমন ছোলা, মসুরের ডাল, শিমের বিচি, সয়া বিন ইত্যাদি।

২। থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা

আমাদের শরীরে যে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড রয়েছে সে গ্ল্যান্ড থেকে থাইরয়েড হরমোন উৎপাদিত হয়। এই থাইরয়েড হরমোন শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তার মধ্যে একটা কাজ হচ্ছে মেটাবলিজম করা। মেটাবলিজম হলো আমরা প্রতিদিন যে খাবারগুলো খাই তা ভেঙ্গে শক্তি এবং তাপে পরিণত করা। অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন খাবার ভেঙ্গে শক্তি তৈরি করে। তাই আপনার যদি থাইরয়েড হরমোন কম তৈরি হয়, তাহলে খাবার ভেঙ্গে শক্তি তৈরি করার যে প্রসেস সেই প্রসেস কম হবে। ফলে শরীরে কম শক্তি সরবরাহ হবে এবং আপনি দুর্বল অনুভব করবেন।

আবার যাদের থাইরয়েড গ্ল্যান্ড অনেক বেশি একটিভ অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোন বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয় তাদের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়। যাদের থাইরয়েড হরমোন বেশি পরিমাণে উৎপাদিত হয় তাদের মেটাবলিজম বেশি হয়। ফলে শরীরে শক্তি সরবরাহের অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রেও দুর্বল লাগতে পারে। তবে থাইরয়েড হরমোন বেশি উৎপাদিত হলে দুর্বল লাগার সম্ভাবনা কম থাকে। অন্যদিকে দুর্বল লাগার বেশি সম্ভাবনা থাকে থাইরয়েড হরমোন কম উৎপাদিত হলে। মেডিকেলের ভাষায় এটাকে বলা হয় হাইপোথাইরয়ডিজম।

লক্ষণ

এখন কয়েকটি লক্ষণ বলছি যে লক্ষণ গুলো খেয়াল করলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার এই দুর্বল লাগার কারণ হাইপোথাইরয়ডিজম কিনা।

  • যাদের হাইপোথাইরয়ডিজম আছে তাদের ঠান্ডা লাগার অনুভূতি বেশি থাকে। ধরুন কোন এক ঘরে কয়েকজন একসাথে আছেন, অন্য কারো ঠাণ্ডা লাগছে না, শুধু আপনার ঠান্ডা লাগছে। এটা হাইপোথাইরয়ডিজম এর কারণে হতে পারে।
  • স্কিন শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
  • মোটা হয়ে যেতে পারেন।
  • মুখ ফুলে যেতে পারে।
  • ভুলে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • ডিপ্রেশন হতে পারে।

দুর্বলতার পাশাপাশি ওপরের এই লক্ষণগুলো যদি আপনার মধ্যে থাকে তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে আপনার থাইরয়েডটাকে ফিক্স করতে হবে অর্থাৎ থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতা দূর করতে হবে। তাহলে আপনি শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

৩। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাব

ঘুমের মধ্যে আমাদের বিভিন্ন ধরনের হরমোন রিলিজ হয়। যেমন গ্রোথ হরমোন। এই হরমোন গুলো শরীরের বিভিন্ন কাজ করে। যেমন আমাদের কোষগুলোকে রিপেয়ার করে এবং নতুন কোষ তৈরি করে। এগুলো হরমোন গুলো আমাদের শরীরের জন্য দরকার। কারণ আমরা সারাদিন যে কাজকর্ম করি, তাতে আমাদের শরীরের অনেক ক্ষয় হয়। সেই ক্ষয়গুলো আমরা ঘুমের মাধ্যমে আবার রিপেয়ার করি যেন আমরা পরের দিন আবার কাজ করার জন্য রেডি হতে পারি।

দুর্বল লাগার কারণ ও সমাধান

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ ঘন্টা করে ঘুমানো উচিত। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এই ৭ ঘন্টা ঘুমানোর পরেও পরের দিন অনেক দুর্বল লাগছে। এইটার কারণ হতে পারে তার ঘুমটা ঠিকই ৭ ঘন্টা হয়েছে, কিন্তু ঘুমের কোয়ালিটি ভালো হয়নি। ধরুন আপনি ঘুমানোর কথা রাত ১০ টায় কিন্তু ঘুমালেন রাত ৩ টায়। সে ক্ষেত্রে আপনার ঘুমের অর্ধেক অংশই পড়ে যাচ্ছে দিনের বেলায়। দিনের বেলা তো মূলত কাজ করার জন্য ঘুমানোর জন্য নয়।

আবার অনেকের দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাসই থাকে। তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে দিনের বেলা ঘুমানোর কারণে রাতে তার ঘুমটা ভালো হয় না। আবার দেখা যায় অনেকের কোন রোগের কারণে বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ঘুম অনেক পাতলা হয়, একটু পর পর জেগে ওঠেন। এইসব কারণে ঘুমের কোয়ালিটি নষ্ট হতে পারে এবং শরীর দুর্বল লাগতে পারে।

৪। দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা বা ক্রনিক পেইন

অনেকের দেখা যায় বিভিন্ন গিরায় গিরায় ব্যথা, কোমরে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা অথবা হাড়ের কোথাও ব্যাথা। এই ব্যথা যখন দীর্ঘমেয়াদি হয় তখন তার দুর্বল লাগার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তাদের শরীরে যেহেতু ব্যথা এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা, ঘুমের মধ্যে এই ব্যাথা অনুভব করেন যার কারণে ঘুম ভালো হয় না। বিশেষ করে বেশিরভাগ ব্যথায় দেখা যায় রাতের দিকে একটু প্রবল হয়। এই কারণে প্রতিনিয়ত তাদের ঘুম খারাপ হয়। আর ঘুম যদি খারাপ হয় তাহলে তো দুর্বল লাগবেই।

দুর্বল লাগার কারণ ও সমাধান

আবার যাদের এই দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা থাকে তারা ব্যথানাশক ওষুধ খান। আর ব্যথার ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে শরীর দুর্বল লাগার আরেকটা কারণ। এছাড়াও দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার কারণে এই মানুষদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি কমে যায়। যাদের দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা রয়েছে তারা ব্যাথার অনুভব কমানোর জন্য ব্যথা অনুভূত হতে পারে এমন কাজ কমাতে থাকেন এবং এটা এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এভাবে ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি কমে যায় আর ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি কম হলে শরীর দুর্বল লাগতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার কারণে যদি দুর্বলতা হয় তাহলে ব্যথা দূর করতে হবে। ব্যথা দূর করার জন্য আপনি যদি নিজে নিজে পেইনকিলার খান, তাহলে কিন্তু ব্যথাটা আর ভালো হবে না। যেই কারণে ব্যথা হচ্ছে ঠিক সেই কারণটা খুঁজে বের করে চিকিৎসা করাতে হবে। কোথাও যদি ভেঙে গিয়ে থাকে বা কোন একটা রোগের কারণে যদি ব্যথা হয়ে থাকে, তাহলে সেই রোগটাকে চিকিৎসা করতে হবে যেন প্রতিনিয়ত আপনাকে ব্যথার ওষুধ খেতে না হয়।

৫। ডিপ্রেশন

ডিপ্রেশন কিন্তু খুব খারাপ একটা ব্যাপার। ডিপ্রেশনটাকে আমরা আমাদের কালচারে খুব একটা গুরুত্ব দেই না। ডিপ্রেশনের ব্যাপারটা হচ্ছে এরকম যে আপনি খুব হতাশ, কিছু করতে ইচ্ছা করে না, কোন কাজের মোটিভেশন নেই, সারাক্ষণ মনে হয় আপনাকে দিয়ে কিছুই হবে না বা আপনার জীবনের কোন আশা, ভরসা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা সবকিছু ফুরিয়ে গেছে এরকম একটা অনুভূতি। এগুলো হলো ডিপ্রেশনের সাধারন উদাহরণ। আপনি ডিপ্রেশনে থাকলে আপনার এরকম লাগতে পারে। তবে ক্লিনিকাল ডিপ্রেশনের ব্যাপারে আপনি একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এর কাছে গেলেই তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারবেন আপনি আসলে ডিপ্রেসড কিনা।

ডিপ্রেশনে থাকলে আমাদের নিউরোট্রান্সমিটারে বেশ কিছু এলোমেলো হয়। যার ফলে দুর্বল লাগতে পারে। যারা ডিপ্রেসড বা হতাশাগ্রস্থ তাদের ক্ষেত্রে দুইটা ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়। হয় তারা ভালোভাবে ঘুমাতে পারছেন না বা ভালো ঘুম হচ্ছে না, না হয় তারা অনেক বেশি পরিমাণে ঘুমাচ্ছেন। এই দুইটার কোনটিই আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়।

৬। নিয়মিত ব্যায়াম না করা

নিয়মিত ব্যায়াম বা ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি না করার কারণেও দুর্বল লাগতে পারে। এইটার জন্য আপনাকে যে খুব বেশি ব্যায়াম করতে হবে তা নয়। আপনি মডারেট ব্যায়াম করবেন অর্থাৎ প্রতিদিন আধা ঘন্টা ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট এবং সেটা সপ্তাহে পাঁচ দিন করলেই হবে। এই ব্যায়াম আপনি জিমে গিয়ে করতে পারেন অথবা জিমে যাওয়ার যদি সুযোগ না থাকে তাহলে বাহিরে দৌড়াতে পারেন। আবার বাহিরে দৌড়ানোর সুযোগ যদি না থাকে তাহলে ঘরে এক রুম থেকে অন্য রুমে আধাঘন্টা দৌড়াতে পারেন। সেটাও যদি করার সুযোগ না থাকে তাহলে আপনি একটা জায়গায় দাঁড়িয়েই উঠবস করতে পারেন।

তবে লক্ষ্য রাখবেন ব্যায়াম শুরু করার প্রথম দিনেই একটানা 30 মিনিট উঠবস করা যাবে না। তাতে আপনার পেশীতে ব্যথা হতে পারে। হয়তো পরের দিন ব্যথার কারণে হাঁটাচলা ফেরাই অসুবিধা হতে পারে। তাই প্রতিদিন অল্প অল্প করে সময় বাড়ান। যেমন ধরুন প্রথম দিন ১০ মিনিট করলেন, তারপরের দিন ১৫ মিনিট এভাবে প্রতিদিন ৩০ মিনিটের অভ্যাস গড়ে তুলুন। গবেষণায় নিশ্চিত হওয়া গেছে যে আপনি যদি আপনার শরীরে যদি কোন রোগ বালাই না থাকে এবং আপনি যদি আজকে থেকেই ব্যায়াম করা শুরু করেন তাহলে ১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার শরীরে হারানো শক্তি ফিরে পাবেন।

ব্যায়াম যে আমাদের শরীরের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে তার বেশ কয়েকটা কারণ আছে। প্রথমত, ব্যায়াম করার কারণে নিজের শুধু ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি করছেন তা নয়, এটার সাথে আরো জিনিস কানেক্টেড। যেমন ব্যায়াম করার সময় আমাদের নার্ভাস সিস্টেম ইনডোরফিন নামক এক ধরনের হরমোন রিলিজ করে। এই ইনডোরফিন হরমোনের আরেক নাম হচ্ছে ফিল গুড হরমোন। এই হরমোন আমাদের মনে সুখের অনুভূতি দেয়। এছাড়া আমাদের স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, আমাদের পেশীগুলোকে উজ্জীবিত করে এবং শক্তিশালী করে।

দ্বিতীয়ত, ব্যায়ামের কারণে আপনার ঘুমের কোয়ালিটিটা ভালো হবে। আগের মতই আপনি ঘুমাবেন ৭ ঘন্টাই কিন্তু আগে ৭ ঘন্টা ঘুমানোর পরে যতটুকু ফ্রেশ অনুভব করতেন, ব্যায়াম করার পরে একই সময় ঘুমিয়ে তার থেকে বেশি ফ্রেশ অনুভব করবেন। তৃতীয়ত, আপনার কাজকর্মে মনোযোগ বেড়ে যাবে। আপনি যদি কর্মজীবী হন তাহলে আপনার কাজে মনোযোগ বাড়বে, আর আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট হন তাহলে আপনার লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়বে।

দুর্বল লাগার আরো বেশ কিছু কারণ

দুর্বলতার আরো বেশ কিছু ছোটখাটো কারণ থাকতে পারে যেগুলি আসলে ঘুম রিলেটেড। যেমন আপনি যদি অতিরিক্ত চা-কফি খান তাহলে চা-কফির কারণে আপনার ওই মুহূর্তে চাঙ্গা লাগতে পারে, কিন্তু আপনার রাতের ঘুমের কোয়ালিটি নষ্ট হতে পারে। দেখা যাচ্ছে আপনি ৭ ঘন্টা ৮ ঘন্টা ঘুমালেন ঠিকই কিন্তু ঘুম ভালো হলো না, পরের দিন আপনার দুর্বল মনে হচ্ছে।

শরীর দুর্বল লাগার কারণ ও সমাধান

এছাড়া যারা শিফটওয়ার্ক করে থাকেন অর্থাৎ যাদের রাতে ডিউটি করতে হয়, আবার পরের সপ্তাহে গিয়ে দিনে ডিউটি করতে হয়, তাদের ঘুমের রেগুলারিটিটা থাকে না। অনেকের ক্ষেত্রে হয়তো এটা অভ্যাস হয়ে যায়, যার কারণে তারা সমস্যা অনুভব করেন না। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই এটা দুর্বল লাগার একটা কারণ হতে পারে।

এছাড়াও কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় দুর্বল লাগতে পারে। যেমন যারা ব্লাড প্রেসারের ওষুধ খাচ্ছেন বা অ্যান্টি-ডিপ্রেশন খাচ্ছেন তাদের শরীর দুর্বল লাগতে পারে। আপনার হার্টের সমস্যার কারণেও দুর্বল লাগতে পারে।

দুর্বলতায় জরুরি অবস্থার লক্ষণ

এখানে কিছু লক্ষণ উল্লেখ করছি। এই লক্ষণগুলো যদি আপনার দুর্বলতার সাথে থাকে তাহলে জরুরী ভিত্তিতে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিবেন।

  • চোখে ঝাপসা দেখা বা উল্টাপাল্টা দেখা
  • কথা বলতে অসুবিধা হওয়া
  • শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া
  • বুকে ব্যথা
  • প্রচণ্ড মাথাব্যথা
  • শরীরের এক পাশ অবশ হয়ে আসা
  • কনফিউশনে থাকা
শরীর দুর্বল লাগার উপরোক্ত কারণ ও সমাধান বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল। সমাধানগুলো সকলের শরীরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। তাই উল্লেখিত সতর্কতাসমূহ অবলম্বন করার পরেও আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর না হলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হউন, চিকিৎসা নিন এবং সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url