শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা - ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা

সুস্বাস্থ্য ও সুস্থতা বজায় রাখার জন্য শারীরিক ব্যায়াম অপরিহার্য। এটি শরীর এবং মন উভয়ের জন্য অনেক উপকারী। আপনার যদি কায়িক পরিশ্রমের যথেষ্ট সুযোগ না থাকে, তাহলে শরীর চর্চা বা শারীরিক ব্যায়াম আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু আপনি জানেন কি, শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা কি? এখানে কিছু শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তার উপর দৃষ্টি দেয়া যাক।

শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা - শরীরচর্চা কেন করবেন

শরীরচর্চা বা ব্যায়াম শুরু করার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন আমাদের কেন শরীর চর্চা করা প্রয়োজন। আপনি যদি সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে চান তাহলে শরীর চর্চা করুন। আসুন আমরা শরীরচর্চার কিছু প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনে নেই-

ভূমিকা

শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রত্যেকের নিয়মিত শরীর চর্চা করা প্রয়োজন। শরীর চর্চা আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রেখে আমাদের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই শরীর চর্চার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানুন এবং আপনি কেন শরীরচর্চা করবেন সে বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুন। আমরা এই পোস্টে শরীর চর্চা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কিছু ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি।

শারীরিক সুস্থতা

নিয়মিত ব্যায়াম কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস উন্নত করতে সাহায্য করে, পেশী শক্তি এবং সহনশীলতা বাড়ায়, নমনীয়তা বাড়ায় এবং সামগ্রিক শারীরিক কর্মক্ষমতা উন্নত করে। এটি স্বাস্থ্যকর শরীরের নিয়ন্ত্রিত ওজন বজায় রাখতেও অবদান রাখতে পারে।


শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে হলে ব্যায়াম অপরিহার্য। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সচল থাকে, ফলে কোন রোগের জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা করুন এবং সুস্থ থাকুন।

রোগ প্রতিরোধ

এই পৃথিবীর প্রায় সকল রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের মধ্যে। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ফসল রাখতে এবং নিয়ন্ত্রিত কার্যকলাপে উম রাখতে শারীরিক ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার এবং স্থূলতা সহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। ব্যায়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে, কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা

শারীরিক সুস্থতা এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য যেমন শরীর চর্চার প্রয়োজন নেই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও শরীর চর্চার ভূমিকা অপরিসীম। মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য বহুলাংশে শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরে নির্ভরশীল। শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। শরীর চর্চা বা ব্যায়াম মস্তিষ্কের স্নায়ু গুলোকে উদ্দীপ্ত রাখে এবং দুশ্চিন্তা দূর করে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

শারীরিক ব্যায়াম মানসিক সুস্থতার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এটি উদ্বেগ এবং হতাশার লক্ষণগুলি কমাতে, মেজাজ উন্নত করতে, আত্মসম্মান বাড়াতে এবং ভাল ঘুমের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করতে সহায়তা করতে পারে। ব্যায়াম এন্ডোরফিন নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে, যা মস্তিষ্কে প্রাকৃতিক মেজাজ-বর্ধক রাসায়নিক।

ওজন নিয়ন্ত্রণ

নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যের পাশাপাশি শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ক্যালোরি পোড়াতে, বিপাক বাড়াতে এবং চর্বিহীন পেশী তৈরি করতে সহায়তা করে। একটি স্বাস্থ্যকর খাওয়ার পরিকল্পনার সাথে ব্যায়ামের সমন্বয় ওজন হ্রাস এবং ওজন রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করতে পারে।

হাড় এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্য

ওজন বহন করার ব্যায়াম, যেমন হাঁটা, দৌড়ানো এবং প্রতিরোধের প্রশিক্ষণ, হাড়কে শক্তিশালী করতে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। শারীরিক কার্যকলাপ জয়েন্টের স্থায়িত্ব, নমনীয়তা উন্নত করে এবং জয়েন্টে ব্যথা বা শক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমায়।

জ্ঞান ইন্দ্রিয় সমূহের উন্নতি

ব্যায়াম , মেমরি, মনোযোগ, এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা সহ উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি মস্তিষ্কে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং নতুন স্নায়ু কোষ এবং সংযোগের বৃদ্ধিকে উৎসাহ দেয়।

মানসিক চাপ হ্রাস

শারীরিক কার্যকলাপ একটি প্রাকৃতিক মানসিক চাপ রিলিভার হিসাবে কাজ করে। ব্যায়ামে নিযুক্ত থাকা স্ট্রেস লেভেল কমাতে সাহায্য করে, মানসিক চাপ মোকাবেলা করার ক্ষমতা উন্নত করে এবং উত্তেজনা মুক্ত করার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর আউটলেট প্রদান করে।

দীর্ঘায়ু লাভ

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম দীর্ঘ আয়ুর সাথে যুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্যক্তিরা নিয়মিত ব্যায়ামে নিযুক্ত থাকে তারা স্বাস্থ্যকর, আরও সক্রিয় জীবনযাপন করে এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করে।

শেষ কথা

এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে প্রত্যেকের ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা তাদের বয়স, ফিটনেস স্তর এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। আপনার নির্দিষ্ট চাহিদা এবং ক্ষমতার জন্য উপযুক্ত ব্যায়ামের রুটিন নির্ধারণ করতে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার বা প্রত্যয়িত ফিটনেস প্রশিক্ষকের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url