বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - বই পড়ার উপকারিতা
মানব সভ্যতার বিকাশের মাধ্যমে সফলতার জন্য সর্বোপরি জীবনের জন্য প্রয়োজন বই। বই মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ যা পার্থিব সম্পদের সাথে তুলনা করা যায় না। কারণ পার্থিব সম্পদ একদিন বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বই থেকে অর্জিত জ্ঞান কোনদিন নষ্ট হয় না। আসুন আমরা বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - বই পড়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই-
ভূমিকা
জ্ঞান বৃদ্ধি
বই পড়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের জ্ঞানের পরিধি অনেক বিস্তৃত করতে পারি। বই হলো অসীম জ্ঞানের ভাণ্ডার। যত বেশি বই পড়া যায় , তত বেশি জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। বই পড়ার মাধ্যমে বিভিন্ন নতুন নতুন তথ্যের সাথে পরিচিতি লাভ হয়। এতে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়।
বই হল পৃথিবীর জানালা শুরু যা আমাদের অসীম জ্ঞান ভান্ডার আবিষ্কারের সুযোগ করে দেয়। বই থেকে বিজ্ঞান ইতিহাস ঐতিহ্য সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন গবেষণা বর্ণনা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ করতে পারি।
মানসিক উত্তেজনা বৃদ্ধি
একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে বই পড়ার অভ্যাস মানুষের ডিমেন্সিয়া ও আলজেহিমা নামে দুটি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে । বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কে এক ধরনের উত্তেজনার ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় যা মানুষের মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। শরীর সুস্থ রাখতে আমরা যেমন ব্যায়াম করি তেমনি বই পড়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্ক শক্তিশালী ও সজীব থাকে।
মানসিক চাপ হ্রাস
বই পড়ার অভ্যাস আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। একটি ভাল বইয়ের সাথে জড়িত থাকা আপনাকে অন্য জগতে নিয়ে যায় যা আমদের সাময়িকভাবে মানসিক চাপ এবং উত্তেজনা থেকে মুক্তি দেয়। বই পড়ার অভ্যাস আমদের প্রতিদিনের উদ্বেগ থেকে বিরতি নিতে এবং একটি মনোমুগ্ধকর বর্ণনায় নিজেকে নিমজ্জিত করতে সু্যোগ করে দেয়।
আরও পড়ুনঃ ঘুমের সমস্যা দূর করার ঘরোয়া উপায় - ভালো ঘুমের ঘরোয়া কৌশল
ভাষাজ্ঞান ও শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি
বই পড়া, বিশেষ করে ভাল লেখা, পাঠকদের কাছে সঠিক ব্যাকরণ, বাক্য গঠন এবং শব্দভান্ডার তুলে ধরে। ফলস্বরূপ, বলার ক্ষমতা সহ ভাষার দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। বই পড়ার ফলে আমরা দেশী-বিদেশী নতুন নতুন শব্দের সাথে পরিচিত হই এবং এটি আমাদের শব্দভান্ডারকে প্রসারিত করে। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের বাচনভঙ্গিকে স্পষ্ট , সুন্দর ও তাৎপর্যমন্ডিত করতে পারি।
স্মৃতিশক্তির উন্নতি
বই পড়ার অভ্যাস আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। যে কোনো বই পড়ার সময় পাঠককে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে বিষয়ভিত্তিক তথ্যসূত্র মনে রাখার প্রয়োজন হয়। যেমন কেউ গল্পের বই পড়লে তাকে গল্পের চরিত্রের নাম , ইতিহাস , স্থান , গল্পের উদ্দেশ্য , প্লট , উপকাহিনি , সবটাই মনে রাখতে হয়। এতে মস্তিষ্কের অনেক অনুশীলন হয় ফলে বিদ্যমান স্মৃতিকে আরও শক্তিশালী করে এবং স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিকে আরও উন্নত করে।
অন্যের থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন
আমরা বইয়ে যা পড়ি তা মূলত কারও বিশেষ জ্ঞান কিংবা অভিজ্ঞতা থেকেই লেখা। লেখক তার বইয়ে তার জীবনের সফলতা এবং ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা করে। সেই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আমরা আমদের ভুলগুলো চিহ্নিত করে সঠিক পথ অবলম্বন করতে পারি।
কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি
বই পড়ার অভ্যাস আমাদের কল্পনাকে প্রজ্বলিত করে নতুন বিশ্ব এবং সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যায়। একজন পাঠক যতবেশি বই পড়বে ততবেশী কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারন বই পড়ার মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যেতে পারি। বই নতুন জগতের নতুন চিত্র , নতুন বর্ণনা নতুন নতুন ভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। ফলে আমাদের কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পায়। বই পড়ার মাধ্যমে মনের সৃজনশীল অনুষদকে উদ্দীপিত করে, নতুন ধারণা এবং দৃষ্টিভঙ্গির উদ্ভবের সুযোগ করে দেয়।
শেষকথা
সামগ্রিকভাবে, বই পড়া একটি ফলপ্রসূ এবং সমৃদ্ধিমূলক ক্রিয়াকলাপ যা বৌদ্ধিক উদ্দীপনা এবং জ্ঞান অর্জন থেকে মানসিক সুস্থতা এবং ব্যক্তিগত উন্নতি পর্যন্ত প্রচুর সুবিধা প্রদান করে।
T Time Trend এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url